ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো?

ফ্রিল্যান্সিং একটি স্বাধীন পেশা যে পেশায় পূর্ন স্বাধীনতা রয়েছে এবং আপনি আপনার মনের মতো করে যেকোন সময় কাজটি করতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিং দারুন একটি পেশা যার মাধ্যমে আপনি স্বাধীন ভাবে অনলাইনে কাজ করে উপার্জন করতে পারবেন।



আপনি চাইলে নিজেই নিজের কাজের সময় এবং স্থান নিধারন করতে পারবেন আর নিজের কাজকে আনন্দদায়ক ও উপভেগীয় করতে পারেন।

একই সঙ্গে ফ্রিল্যান্সিং আপনাকে বিভিন্ন গ্রাহকের বা ক্লাইন্ট এর সঙ্গে কাজ করার সুজোগ প্রদান করে। ফলে আপনি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কাজ করতে পারবেন। আর কাজের ধরন ভিন্ন হওয়ায় অনেক নতুন নতূন বিষয় শিখতে পারবেন। যত বেশী নতুন নতুন কাজ করবেন আপনার কমিউনিকেশন স্কিল এবং কজের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।

ফ্রিল্যান্সিং কি?

ফ্রিল্যান্সিং কি? সেটা বুঝতে হলে আপনাকে আগে বুঝতে হবে স্বাধীন পেশা কি? স্বাধীন পেশা হচ্ছে যে পেশায় আপনি আপনার ইচ্ছা মতো সময়ে পছন্দের কাজ করতে পারবেন।

উদাহরণ, স্বরূপ আপনি কৃষি কাজে দক্ষ এবং আপনি একজন ফ্রিল্যান্সার  আপনি জানেন কৃষি কাজ বিভিন্ন ধরনের হতেপারে যেমন: জমি চাষ, পানি সেচ দেওয়া, বীজতলা প্রস্তুত করা, ইত্যাদি। আপনি সবগুলোই পারেন তবে সব কাজ করার ইচ্ছা নেই আপনার। হতেপারে কেই একজন আপনাকে বললেন আমার জমি চাষ করতে হবে শুধু চাষ করার জন্য তোমাকে ৫ টাকা দিব। তবে আপনার তখন চাষ করার ইচ্ছা নেই বা করতে চাচ্ছেন না। কাজেই আপনি তাকে না বলে দিতে পারেন।

সে আপনাকে জোর করতে পারবে না। আবার চাইলে আপনি করতে পারেন। আবার এমনও হতে পারে যে আপনি তাকে বল্লেন যে আপনি তার জমিতে পানি সেচ দিতে পারবেন। তার জমি অন্য কেউ চাষ করার পরে সে জেন আপনাকে সেচ এর কাজটা দেয়। আপনি একটি অফার াদতে পারেন তাকে যে ২ টাকার বিনিময় তার জমিতে সেচ দিবেন। আবার এমনও হতেপারে সে আপনাকে ৩ দিন সময় দিলো আপনি ২ দিন ৪ ঘন্টা করে কাজ করলেন এবং শেষ দিন ১৪ ঘন্টা কাজ করে কাজ শেষ করলেন।

এক কথায় বলতে গেলে নিজের সুবিধা মতো কাজ করে, ক্লাইন্টের কার সময় মতো সম্পূর্ন করা। এছাড়া যদি বেশী সময়ের প্রয়োজন হয় তা হলে ক্লইন্টের সাথে আলোচনার মাধ্যমে কাজের সময় বৃদ্ধি করা।

যেসব ৬ টি পদক্ষেপ অনুুুুুকরন করলে সহজেই ফ্রিল্যান্সিং শিখাতে পারবেন। তা হলো:

১. লক্ষ:  প্রথমে আপনার স্পষ্ট লক্ষ স্থির করতে হবে যে আপনি কোন উদ্দেশ্যে কি কাজ করবেন ?

আপনি কী ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কাজ করবেন ? কোন বিষয়ের উপর কাজ করবেন। এবং কেমন উপার্জন করতে চান তার স্পষ্ট পরিকল্পনা করতে হবে।

২. দক্ষতা যাচাই:  যে বিষয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ কাজ করতে চাচ্ছেন সেই বিষয়ে আপনার পূর্বর কোন দক্ষতা রয়েছে কিনা তা আপনাকে চিহ্নিত করতে হবে। যদি পূর্বের কোন অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর একটি বেসিক কোর্স করে বা ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে আপনার কাজটা কেমন হতেপারে তার উপরে একটি সাধারন ধারনা নিয়েই আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শুরু করতে পারেন।

এছাড়া জদি নতুন কো বিষয়ের উপর দক্ষতার প্রয়োজন হয় তাহলে অনলাইনের বিভিন্ন কোর্স এবং টিউটোরিয়ালগুলি ব্যবহার করতে পারেন। এবং যেকোন অনলাইন প্লাটর্ম থেকে আপনি ফ্রি অনলাইন কোর্স উনরোল করতে পারেন।

৩. নিজের দক্ষতা ও আগ্রহ: ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে আপনার নিজের দক্ষতা এবং আগ্রহের পরিমাণ পর্য়াপ্ত কিনা তা যাচাই করতে হবে। আপনার নিজের দক্ষতা ও আগ্রহ অনুসারে আপনি কোন সেক্টরে কাজ করতে চান তা নির্ধারণ করতে হবে। আপনার দক্ষতা ও আগ্রহ যদি পর্যাপ্ত পরিমান থাকে তবে তার উপর নির্ভর করেই আপনি সফলভাবে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন।

৪. বিষয় নির্বাচন: কোন ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হওয়ার আগে ভালভাবে বিবেচনা করে দেখে নিতে হবে সেই প্ল্যাটফর্মে আপনার দক্ষতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কাজ রয়েছে কিনা।

যে কাজটি আপনি সবচেয়ে সুন্দর এবং স্বাচ্ছন্দে করতে করতে পারবেন  সেটি সংগ্রহ করার চেষ্টা করতে হবে। আপনি নিজের দক্ষতা এবং আগ্রহের উপর ভিত্তি করে বিষয় নির্বাচন করতে করবেন, যেমন কি কাজ পারেন, কি কাজ করবেন, কোন কাজ করতে ভালোলাগে,কাজের অভিজ্ঞতা আছে কিনা  ইত্যাদি।

৫.সময় নির্ধারন: ফ্রিল্যান্সিং শিখতে আপনাকে ভাল এবং সঠিক সময় মানেজমেন্ট করতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য আপনাকে সময় এবং রুটিন মেনে চলতে হবে এবং সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। এছাড়াও আপনাকে নিজে নিয়মিত রুটিন তৈরি করতে হবে যাতে আপনি কাজের সময়ে নির্ধারিত কাজ বা কোর্স সম্পূর্ন করতে পারেন।


৬. সামরিক প্রস্তুতি: ফ্রিল্যান্সিং শিখতে আপনাকে সামরিক প্রস্তুতি নিয়ে চলতে হবে। এটার মানে আপাকে একজন সৈনিকের মতো রুটিন করে, কঠোর পরিশ্রম ও দিসসিপ্লিন মেনটেইন করতে হবে। আপনাকে নিজের কাজের জন্য একটি সময় সারসংক্ষেপ তৈরি করতে হবে। আপনি কীভাবে আপনার কাজগুলি সম্পন্ন করতে চান, যেমন কাজের সময়সূচি, মডেল, তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া, ইত্যাদি।

এই ৬টি সহজ পয়েন্ট  আপনাকে সম্পূর্ণ ফ্রিল্যান্সিং শেখার  জন্য আপনাকে সয়াতা করবে। এগুলির মাধ্যমে আপনি নিজেকে ফ্রিল্যান্সিং জগতে একজন সফল দক্ষ ফ্রিল্যান্সার করতে পারবেন এবং সফলভাবে ক্লায়েন্টদের কাজ ও সেবা প্রদান করে আয় করতে পারবেন পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং কি হালাল ?

একজন মুসলীম বাঙ্গালী হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং হালাল কিনা, এই বিষয় টি সবার আগে ক্লিয়ার হওয়া দরকার। চলুন কিছু ছোট ছোট বিষয় এবং লজিক বিবেচনা করে বিচার করবো ফ্রিল্যান্সিং হালাল কিনা।  ফ্রিল্যান্সিং এ আমরা কি করে আয় করি? আবশ্যই কাজ করে। ইসলামে কাজ করা হালাল । কাজ কোথা থেকে পাই কোন প্রতিষ্ঠান, বা ব্যাক্তির কাছ থেকে, এটিও হালাল। ফ্রিল্যান্সিং এ নিজের ইচ্ছা মতো পছন্দের কাজ করতে পারি এই ব্যাপারে ইসলামের কোন নিষেধাজ্ঞা নেই।

ফ্রিল্যান্সিং হারাম অনেকেই মনে করেন। কারন হিসেবে তারা বলেন এত কম সময়ে এত কম কাজ করে এত টাকা আয় করা সৎপথে সম্ভব না। হ্যা তাদের লজিক ঠিক আছে তবে ছোট্ট একটি ভুল রয়েছে। ভুলটি হলো তারা কেবল আমাদের দেশের কাজ কে তুলনা করেছেন ফলে টাকার অংক একটু  অস্বাভিক মনে হয়েছে। 

একটু সহজে বলি, আপনার এলাকার কোন পন্যের দাম তুলনামূলক আমার এলাকায় কম বা বেশী হতে পারে। ঠিক তেমনই আমরা যে কাজ ৫০০ টাকায় করি অন্য দেশে সেই কাজের মূল্য ৫০০০ টাকা হতে পারে আবার কমও হতে পারে। তবে কম হলেও আমাদের দেশের মুদ্রা বা টাকার মূল্য অন্য দেশের তুলনায় কম সেই ক্ষেত্রে আমরা কাজের বিনিময় বৈদেশিক মুদ্রা আয় করলে আমাদের বেশী থাকা টা স্বাভিক।

এক কথায় বলতে গেলে যারা বিদেশে বা প্রবাশে চাকুরি করতে যান তারা কিন্ত সেখানে আমাদের দেশের তুলনায় বেশী টাকা আয় করেন। কারন তারা বিদেশী মুদ্রায় আয় করেন। এবং আমাদের দেশের থেকে তাদের দেশে শ্রমের মূল্য বেশী। আশাকরি বুঝতে পেরেছেন। আরো পরিস্কার ভাবে বুঝতে পারবেন যখন আপনি জানবেন ফ্রিল্যান্সিং কি?

পরিশেষ

আশা করি, এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে, ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো? এই বিষয়টি সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে জানতে পেরেছেন। এখন আপনি চাইলেইি উপরক্ত নির্দেশনা গুলো অনুকরন করে  ফ্রিল্যান্সিং কি? জানতে পারবেন এবং শিখতে পারবেন। কোন সমস্যা হইলে বা এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে নিচে কমেন্ট বক্সে আমাদেরকে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।






সাংবাদিক, প্রযুক্তিবিদ, লেখক ও সমাজ কর্মী।

Next Post
No Comment
Add Comment
comment url