ফেসবুকের মাধ্যমে ১০ উপায়ে টাকা আয় করা। ফেসবুক থেকে আয় করার উপায় ২০২৩।

বর্তমানের জনপ্রিয় একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক । ফেসবুক আমাদের সকালের কাছে একটি বিনোদনের মাধ্যম বটে। তবে ফেসবুকের মাধ্যমে যে আয় করা সম্ভব তা অনেকর কাছেই অজানা। ফেসবুকের শুরুটা যদিও বিনোদনের উদ্দেশ্য হলেও বর্তমান সময় এর থেকে আয় করাও সম্ভব।



বর্তমানে পুরো বিশ্বে ফেসবুক ব্যবহারকারির সংখ্যা  প্রায় ২.৮৫ বিলিয়ন। বাংলাদেশে এই সংখ্যা প্রায় ৫২.৩ মিলিয়ন। অধিকাংশ ব্যবহার কারি শুধু মাত্র বিনোদনের জন্য ফেসবুক ব্যবহার করে থাকে। ফেসবুক প্রতিষ্ঠান ব্যবহারকারিদের মনিটাইজেশন দিয়ে থাকে। এ ছাড়াও নানাবিধ মাধ্যমে ফেসবুক থেকে একজন ব্যবহারকারি আয় করতে সক্ষম।


ফেসবুকের পণ্য বিক্রি করে আয় :


বর্তমান সময় ফেসবুকের মাধ্যমে অনেক ব্যবহারকারি তার উৎপাদিত পন্য বিক্রি বা প্রচার করে থাকেন। ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে ব্যবহারকারি তার পণ্যের প্রচারণা করতে পরে অনেক মানুষের কাছে যা অতীতের থেকে অনেক সহজে সম্ভব এবং কম সময়ে। উৎপাদক এবং ভোক্তা সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে দ্রুততা এবং খুব সহজেই পণ্য বিক্রি সম্ভব।


একজন ব্যবহারকারি পেইজের মাধ্যমে তার পন্য অনেক মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারে।লাইভ, ভিডিও, কমেন্ট, মেসেজের সমন্বয়ে ভোক্তার খুব কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারেন।এতে করে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার মাধ্যমে ভোক্তার নির্দিষ্ট পণ্য উৎপাদকের কাছ থেকে খুব সহজে পেয়ে যেতে পারে।ঘরে বসেই  অনেক দূরের  উৎপাদকের কাছ থেকে অন্য ক্রয় সম্ভব হয়েছে ফেসবুকের মাধ্যমে।

দেখা যায় কারো কাছে হয়তো সুন্দরবন থেকে আহরণকৃত মধু আছে সে তার বিক্রি করতে চায়,  ফেসবুকের মাধ্যমে অনেক দূর দুরন্তের মানুষের কাছে তা পৌঁছে দিতে পারেন। এতে করে যেকোনো ব্যবহারকারী স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পারেন।


ফেসবুকের এফিলিয়েট মার্কেটিং:


এফিলিয়েট মার্কেটিং হল পরোক্ষ বিক্রয় বা প্রচার।ধরা যাক আপনার কাছে কিছু পণ্য রয়েছে এগুলো আপনি বিক্রি করতে চান। কোন একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী আপনার বিক্রি করার পোস্টটি শেয়ারের মাধ্যমে আপনার থেকে কমিশনের মাধ্যমে আয় করতে পারে একজন ফেসবুক  ব্যবহারকারী , এটাই এফিলিয়েট মার্কেটিং। আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লিংক শেয়ারের মাধ্যমে আয় করতে পারেন অনেক ব্যবহারকারি।যেখানে কোন ব্যবহারকারীর সেবা বা পণ্য প্রয়োজন হলে তার সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে আয় করতে পারেন। এ পদ্ধতিতে খুব সহজেই আয় করা সম্ভব।


ইন-স্ট্রিম অ্যাড:

ইন-সিস্টেম  এড একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে ফেসবুকে ইনকাম করা সম্ভব।ইন সিস্টেম এড হল স্বয়ংক্রিয় বিজ্ঞাপন। যা স্বতন্ত্র যে কোনো বিজ্ঞাপনের থেকে অধিক মাত্রায় কার্যকরী। ফেসবুক ব্যবহারকারী ইচ্ছা করলেই স্বতন্ত্র বিজ্ঞাপন এড়িয়ে যেতে পারেন। কিন্তু ইনস্ট্রিম এড এড়িয়ে যেতে পারে না। সেই ক্ষেত্রে যে সকল পেজ বা ভিডিওর মাধ্যমে ইন সিস্টেম এড ব্যবহারকারী দেখতে পারে তিনি আয় করতে পারেন। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সেই ক্ষেত্রে একটি পেইজের ন্যূনতম ফলোয়ার সংখ্যা দশ হাজার হওয়া বাধ্যতামূলক করেছি। 


ইন সিস্টেম এক পদ্ধতি পেইজের আয় করাতে সাহায্য করে।ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কিছু শর্তসহ ভিডিওটি অবশ্যই এক মিনিট দৈর্ঘ্যের বেশি হতে হবে।তবেই শুধুমাত্র ইন সিস্টেম অ্যাড পদ্ধতিতে ওই পেইজের স্বত্বাধিকার আয় করতে পারেন। 


Facebook Paid / পেইড সাবস্ক্রিপশন:


পেইড সাবস্ক্রিপশন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমেও ফেসবুকে আয় করা সম্ভব।টাকার বিনিময় সাবস্ক্রাইবার  তৈরি করে আয় করা সম্ভব।পেট সাবস্ক্রিপশনের ক্ষেত্রে  ফেসবুক ইউজারেরা  টাকার বিনিময়ে সাবস্ক্রাইবার কিনে তার পেইজের রিচ বাড়াতে পারে। এতে করে তার ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধি পায় বেশি বেশি মানুষের  কাছে তার পণ্যের বিজ্ঞাপন যায় এতে করে তার বিক্রয় বৃদ্ধি পায়  সেইসাথে লাভের পরিমাণ বাড়ে । এর মাধ্যমে একজন কনটেন্ট তার কনটেন্ট মানুষের সামনে অধিক তাড়াতাড়ি পৌঁছে দিতে পারেন।  এতে করে মানুষের কাছে পৌঁছানো আরো অধিকতর সহজ হয়ে দাঁড়ায়। এর মাধ্যমে খুব সহজেই একজন ব্যবসায়ী বা নতুন উদ্যোক্তা তার পণ্য ভোক্তার দৈর্ঘ্য রায় পৌঁছে দিতে পারে।


 এই পদ্ধতিতে ইনকামের ক্ষেত্রে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের বেধে দেওয়া কিছু নিয়ম এবং শর্ত প্রযোজ্য হয়। সে ক্ষেত্রে সঠিকভাবে ধারণা থাকলে একজন ব্যবহারকারী সহজেই এর মাধ্যমে আয় করতে পারেন এবং লাভবান হতে পারেন।


ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ ইনকাম করা


বর্তমান সময়ে ফেসবুক জনপ্রিয় যে কারণে অধিকাংশ ব্যবহারকারী এর মাধ্যমেই অনেক তথ্য পেয়ে থাকে। তাদের প্রিয় কনটেন্ট দেখে থাকেন ফেসবুকের মাধ্যমে। সেই ক্ষেত্রে জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিজ্ঞাপন নিজের কন্টেন্টের মধ্যে প্রমোট করার মাধ্যমেও ইনকাম করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে অধিকাংশ ব্রান্ড গুলো বর্তমানে ফেসবুকে প্রমেশনের দিকে ছুটছেন। তারা বিভিন্ন কনটেন্ট ক্রিয়েটরের মাধ্যমে তাদের ব্রান্ডের প্রোডাক্ট মানুষের কাছে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন। বর্তমান সময়ে যা অতীব জনপ্রিয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এর মাধ্যমেও অনেক কন্টেন্ট ক্রিয়েটর টাকা ইনকাম করছেন।


এক সময়ে যেসব কোম্পানি টিভির মাধ্যমে তাদের বিজ্ঞাপন প্রচারণা করতো তারা সকলেই এখন ফেসবুকের দিকে ছুটছেন।সেক্ষেত্রে আপনি কনটেন্ট ক্রিয়েটের মাধ্যমে ব্যান্ডগুলোর সাথে কোলেব্রেশন করে আপনার ভিডিওর স্পন্সর হিসেবে তাদের পণ্য প্রমোট করে আয় করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ব্রান্ডগুলো আপনাকে তাদের মিডিয়া পার্টনার হিসেবে  নিতে পারেন অথবা তাদের পণ্যের বিশ্লেষণের মাধ্যমেও  আপনি তাদের কাজে আসতে পারেন এবং আয় করতে পারেন। বর্তমান সময়ে এটি খুবই জনপ্রিয় এবং কার্যকরী উপায় হিসেবে পরিচিত।


 ফলোয়ারদের মাধ্যমে আয়


বর্তমান সময়ে ফেসবুকের ঘোষণা অনুযায়ী যে কোন ব্যক্তি যাদের ফলোয়ার সংখ্যা ১০০০ এর উপরে তারা  ফেসবুক রিলের মাধ্যমে  কনটেন্ট তৈরি করে আয় করতে পারেন। এছাড়াও ফলোয়াররা  স্টার সেন্ড এর মাধ্যমে  কনটেন্ট ক্রিয়েটর ইনকাম করাতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে হতে হবে একজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর।


পেইড ইভেন্ট


পিড ইভেন্ট একটি ফেসবুকের প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারী আয় করতে সক্ষম। এর মাধ্যমে বিভিন্ন ইভেন্ট ক্রিয়েট করে একজন ব্যবহারকারী আয় করতে পারেন।বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে একজন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট করি হিসেবে কাজ করে একজন ব্যবহারকারী আয় করতে পারেন ।ক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ম্যানেজিং অপারেটরদের সাথে ব্যবহারকারী সরাসরি ফেসবুকের মাধ্যমে যোগাযোগ করে আয় করতে পারে ।


ফেসবুক মার্কেটিং মাধ্যমে আয়

ফেসবুক মার্কেটিং প্লেস  বর্তমান সময়ে জনপ্রিয় একটি মাধ্যম যার মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারী তার পণ্য ফেইসবুক কমিউনিটির যেকোন মানুষের কাছে বিক্রি করতে পারেন। ব্যবহারকারী সরাসরি তার পণ্য মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়।ফেসবুক মার্কেটপ্লেস এর মাধ্যমে একজন খুব সহজেই ইনকাম করতে সক্ষম হয়। বিভিন্ন লোকের আইডি এবং পেজ প্রমোশনের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব। যা বর্তমানে অত্যন্ত জনপ্রিয়।এর মাধ্যমে বিভিন্ন লোকের পেইজ বা আইডি ম্যানেজমেন্ট এর মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারী আয় করতে পারে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটা বড় অংশ Facebook দখল করে রয়েছে ।ডিজিটাল মার্কেটকেটিং করে একজন মানুষ খুব সহজেই স্বচ্ছল এবং স্বাবলম্বী হতে পারেন।


ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে ফেসবুক  থেকে আয়

ফেসবুকের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করা সম্ভব। আমাদের অনেকের কাছেই ফ্রিল্যান্সিং একটু কঠিনতম শব্দ। স্বাধীনভাবে আয় করাই ফ্রিল্যান্সিং। অনেকেই ভেবে থাকি  দেশের বাইরে কোথাও কম্পিউটারের মাধ্যমে কাজ করে আয় করা  ফ্রিল্যান্সিং। ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। আপনি যদি স্বাধীনভাবে কোন কাজ করেন তবে তাই ফ্রিল্যান্সিং।


 ফেসবুকের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করাও বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আপনি আপনার স্কিল সম্পর্কে ধারণা দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যক্তির কাছ থেকে কাজ পেতে পারেন। ধরুন আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন পারেন। সে সম্পর্কে আপনি যদি ফেসবুকে মার্কেটিং করেন তবে যার গ্রাফিক্স ডিজাইনার প্রয়োজন সে ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার সাথে কানেক্টেড হয়ে আপনাকে কাজ দিতে পারে। এভাবে একজন মানুষ যেভাবে আয় করতে পারেন সেই সাথে সহজেই স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পারেন।


ফ্রিল্যান্সিংয়ের আপনার স্বাধীনতাই মূল কথা। ফেইসবুক এ কারণে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। আপনি আপনার প্রয়োজন এবং ইচ্ছামত কাজের অফার এবং আয় নির্ধারণ করতে পারেন। ফেসবুকের মাধ্যমে আপনি এটি সহজে করতে পারেন।


সারসংক্ষেপ

 

ফেসবুকের মাধ্যমে  আরো অনেক ভাবে আয় করা সম্ভব। আপনার স্কিল মেধা এবং যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে আপনি ফেসবুকের মাধ্যমে আয় করতে পারেন। এখানে আমরা কিছু ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি যাতে আপনার আয়ের পথ  একটু সহজ হয়। সঠিক ধারণা এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে কাজ করলে আপনিও হয়ে উঠতে পারেন একজন সফল  ব্যক্তি।


আশা করি সকলেই সুন্দরভাবে উপরের বিষয়গুলো  দিয়ে একটি ধারণা নিতে সক্ষম হয়েছেন। আপনার ইচ্ছাশক্তি আয়ের একটি বড় মাধ্যম। একজন ব্যক্তি ইচ্ছা করলে অনেক কিছুই করতে সক্ষম থাকেন ফেসবুকের মাধ্যমে আয় এবং আপনার ইচ্ছাশক্তি  একই সাথে আপনার সফলতার পথকে সুগম করবে এমনটাই প্রত্যাশা আমাদের।


ফেসবুকের মাধ্যমে আয় সম্পর্কিত আর যে কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা আমাদের সাথে আপনি শেয়ার করতে পারেন নিজের কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে।এছাড়াও যুক্ত থাকতে পারেন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে।আশা করি নতুন নতুন কনটেন্ট পাওয়ার জন্য আমাদের সাথে যুক্ত থাকবেন।






 জোবায়রুল ইসলাম

 স্টাডিি এট- এ .আই.ইউ.বি. (CSE)


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url